গাজাবাসীর পৃথিবী আরও সংকুচিত গাজায় ২০ দিনে ৪৯০ শিশু নিহত।
নিজস্ব প্রতিবেদক
দৈনিক বাংলার দিগন্ত
ফিলিস্তিনিদের ভূমিতে ইহুদিদের চূড়ান্ত দখলদারিত্ব শুরু হয় আজ থেকে প্রায় ৭৭ বছর আগে। আরব জাতিটির ওপর অনিঃশেষ এক বিপর্যয়ের আনুষ্ঠানিক সেই সূচনা। সেটা ১৯৪৮ সালের ১৪ মে। তখন সেখানে ইসরায়েল রাষ্ট্র স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়। এর পর থেকেই ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূমি থেকে বিতাড়ন অব্যাহত রয়েছে। চলছে হত্যা, নিপীড়ন। গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে তাদের বাড়িঘর, বিদ্যালয়, মসজিদ ও হাসপাতাল। দখল করে নেওয়া হচ্ছে ভূমি।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৮ মার্চের পর থেকে সর্বশেষ সোমবার পর্যন্ত গাজা উপত্যকার ৫০ শতাংশের বেশি এলাকা দখলে নিয়েছে ইসরায়েল। এতে সেখান থেকে সরে যাওয়া ফিলিস্তিনিরা ভবিষ্যতে আর কখনো ফিরতে পারবেন কি না, সেটি নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সেখানে মোতায়েন দখলদার সেনারা ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর, কৃষিজমি ও অবকাঠামোকে বসবাসের অযোগ্য করে তুলেছে। গাজাবাসীর পৃথিবী যেন আরও সংকুচিত হলো।
গতকাল সোমবার বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে এমন চিত্র উঠে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সেনাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা বড় এলাকাগুলো হলো গাজা সীমান্তের আশপাশ। গত মাসে হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় নাটকীয়ভাবে তার অবস্থান বাড়িয়েছে। তারা এখন ৫০ শতাংশেরও বেশি ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ করে এবং ফিলিস্তিনিদের অল্প এলাকার মধ্যে সংকুচিত করে ফেলছে।
ইসরায়েল তার কঠোর নিয়ন্ত্রণকে হামাসের ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য একটি অস্থায়ী প্রয়োজনীয়তা হিসেবে হাজির করেছে। দেশটির দাবি, তারা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলার সময় নিয়ে যাওয়া জিম্মিদের মুক্তির জন্য নতুন করে যুদ্ধ শুরু করেছে। তবে মানবাধিকার গোষ্ঠী ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসরায়েলের দখলে থাকা ভূমির মধ্যে একটি করিডোর রয়েছে। এটি ভূখণ্ডটিকে উত্তর থেকে দক্ষিণে বিভক্ত করেছে। দীর্ঘমেয়াদি নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার জন্য ইসরায়েল এই করিডোর ব্যবহার করতে পারে। গত সপ্তাহেও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছিলেন, হামাস পরাজিত হওয়ার পরও ইসরায়েল গাজার নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখবে এবং ফিলিস্তিনিদের চলে যেতে বাধ্য করবে।
পাঁচজন ইসরায়েলি সেনা এপিকে জানান, ১৮ মাস আগে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি সীমান্তের কাছে ধ্বংসযজ্ঞ এবং বাফার জোনের পদ্ধতিগত সম্প্রসারণ চলছে। পাহারা দেওয়া ট্যাঙ্ক স্কোয়াডের একজন সেনা এপিকে বলেন, ‘তারা (ফিলিস্তিনি) যা কিছু গড়ে তুলেছিল, তা ধ্বংস করা হয়েছে, যা কিছু এখনো চালু আছে বলে মনে হচ্ছে, সেগুলোতেও গুলি করা হচ্ছে... (ফিলিস্তিনিদের) ফিরে আসার মতো কিছুই থাকবে না, তারা ফিরে আসবে না, কখনো নয়।’